উদ্যোক্তা-ধারার বিবর্তন: এক নজরে
আমাদের সমাজের এক উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় দিক হল উদ্যোক্তা হতে চাওয়ার মানসিকতা। বিগত শতাব্দী থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত উদ্যোক্তাদের ভূমিকা এবং প্রভাব বিশালভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন ধারণা এবং উদ্ভাবন দিয়ে গড়ে উঠছে আধুনিক ব্যবসা। বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। নতুন প্রজন্মের তরুণ উদ্যোক্তারা দেশের অর্থনৈতিক পরিমণ্ডলে বড় পরিবর্তন নিয়ে আসছে। কেমন ছিল অতীত, কেমন চলছে বর্তমান এবং ভবিষ্যতে কেমন হবে এই পথচলা—এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আজকের আলোচনায় যাচ্ছি।
অতীতের উদ্যোক্তা: ছোট ব্যবসার শুরুর গল্প
বাংলাদেশের উদ্যোক্তা ধারার শুরু মূলত ক্ষুদ্র ব্যবসার মাধ্যমে। একসময় এ দেশে ব্যবসা ছিল বেশিরভাগই পরিবারকেন্দ্রিক। গ্রামীণ এলাকায় হস্তশিল্প, কৃষি বা ছোট ছোট দোকান ছিল উদ্যোক্তা-ধারার মূল ভিত্তি। ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন হতো দক্ষ শ্রমিক, পারিবারিক সহযোগিতা, এবং সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা। এই সময়ে ব্যবসায়ের লক্ষ্য ছিল সুনাম ও পরিবারের স্বচ্ছলতা বজায় রাখা। বিনিময় প্রথা থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে নগদ অর্থের আদান-প্রদানই ব্যবসার মূলমন্ত্র হয়ে ওঠে।
উদাহরণ হিসেবে নেওয়া যায়, আমাদের দেশের গ্রামীণ বাজারগুলির কথা। তাত, তাঁত শিল্প কিংবা মাটির জিনিসপত্রের ব্যবসা ছিল লোকাল ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র। উদ্যোক্তারা মূলত স্থানীয় পর্যায়ে নিজেদের ব্যবসা গড়ে তুলতেন এবং স্থানীয় চাহিদা মেটাতেন। প্রযুক্তির সীমিত উপস্থিতির কারণে ব্যবসার প্রসার ছিল তুলনামূলকভাবে ধীর। তবু এর ভিত ছিল শক্ত।
বর্তমান: প্রযুক্তির ছোঁয়ায় স্টার্টআপ সংস্কৃতি
বর্তমান সময়ের উদ্যোক্তারা প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী চিন্তার ভিত্তিতে ব্যবসা শুরু করছেন। ইন্টারনেট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উন্নতির কারণে অনেক উদ্যোক্তা আজকেই নিজেদের ব্যবসা গড়ে তুলছেন। স্টার্টআপ সংস্কৃতি এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের উন্নতি বাংলাদেশের ব্যবসা পরিবেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।
অনেক তরুণ উদ্যোক্তা নিজেদের উদ্ভাবনী ধারণা বাস্তবে রূপ দিতে অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করছেন। গবেষণা অনুযায়ী, ২০২০ সালের পর থেকে ই-কমার্স খাতের প্রবৃদ্ধি প্রায় ৩০% বৃদ্ধি পেয়েছে।
বর্তমান প্রজন্মের ব্যবসায়িক মনোভাব শুধুমাত্র লাভের দিকে নয়, বরং সামাজিক দায়বদ্ধতা, টেকসই ব্যবসা নীতি এবং গ্রাহক সন্তুষ্টির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। তরুণ উদ্যোক্তারা এখন ক্লাউড কম্পিউটিং, ব্লকচেইন, এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) এর মত প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন ধরণের সেবা এবং পণ্য সরবরাহ করছেন।
ভবিষ্যৎ: উদ্ভাবনের নতুন যুগ
ভবিষ্যতে উদ্যোক্তাদের জন্য অপেক্ষা করছে আরও বড় চ্যালেঞ্জ এবং নতুন সম্ভাবনা। বাংলাদেশে উদ্যোক্তাদের একটি নতুন দিগন্ত হতে পারে গ্রিন টেকনোলজি, রোবটিক্স, এবং বায়োটেকের মতো ক্ষেত্রগুলিতে। প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত উন্নতি করছে, এবং এর সাথে সঙ্গতি রেখে ব্যবসায়িক মডেলগুলোও দ্রুত পরিবর্তিত হবে।
বাংলাদেশে ভবিষ্যৎ উদ্যোক্তারা শুধুমাত্র স্থানীয় বা জাতীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকবেন না, তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করবেন। যেমন অনেক প্রযুক্তিভিত্তিক স্টার্টআপ ইতিমধ্যেই বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন বাজার এবং প্রযুক্তি খাতের উন্মোচন হতে চলেছে।
উপসংহার: পথচলা চলছে, এবং চলবে…
উদ্যোক্তারা যুগে যুগে সমাজের বিভিন্ন পরিবর্তনের সূচনা করেছেন, আর বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা নতুন দিগন্তের স্বপ্ন দেখছেন। ব্যবসার এই গতিপথ আমাদেরকে আরও উদ্দীপিত করছে। উদ্ভাবনী শক্তি এবং প্রযুক্তির সাথে সমন্বয় করে তরুণ উদ্যোক্তারা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও শক্তিশালী করার পথে রয়েছে।
তাহলে, আপনি কি তৈরি উদ্যোক্তা হিসেবে নতুন যুগের পথে পা বাড়াতে? আপনার পরবর্তী বড় আইডিয়া কী হতে পারে? আজই ভাবুন এবং সাহস নিয়ে এগিয়ে যান।
MOST COMMENTED
Bangladesh Football
Bodybuilding exercise techniques and guide lines
JMC DIU Career Related Show “Career Today” is @ RTV
Study Visit from CDC
DIU achieves World Quality Commitment (WQC) Award-2010
Tree Plantation Program at DIU Permanent Campus Plot, Ashulia
Most Spoken Languages In The World