আপনি কি “ক্যারিয়ার ক্যাটফিশার?”

সম্প্রতি “ক্যারিয়ার ক্যাটফিশিং” নামে একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যেখানে কেউ একটি চাকরির প্রস্তাব গ্রহণ করেন, কিন্তু প্রথম দিনে না জানিয়ে কর্মস্থলে না গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। যদিও অনেকের মতে এটি নতুন কিছু নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরেই ঘটছে। দ্য গার্ডিয়ান-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের এক-তৃতীয়াংশ Gen Z চাকরি প্রার্থী কখনও না কখনও এমনটি করেছেন।

চাকরি বাজারের প্রতি হতাশা থেকে এমন আচরণ আসতে পারে, তবে পেশাগত জীবনে সততা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু চ্যালেঞ্জ ও ইতিবাচক পদক্ষেপ তুলে ধরা হলো, যেগুলি আপনার ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক হতে পারে:


১। ‘ক্যারিয়ার ক্যাটফিশিং’ থেকে বিরত থাকুন

চ্যালেঞ্জ: চাকরির প্রস্তাব গ্রহণ করে কর্মস্থলে না যাওয়া আপনার পেশাগত সুনাম নষ্ট করতে পারে এবং ভবিষ্যতে সুযোগ হারানোর কারণ হতে পারে।

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি:

  • সুস্পষ্ট যোগাযোগ বজায় রাখুন: যদি সিদ্ধান্ত নেন যে চাকরিটি নেবেন না, তাহলে নিয়োগকর্তাকে যত দ্রুত সম্ভব জানান। এতে তারা অন্য প্রার্থীদের সুযোগ দিতে পারবেন এবং ভবিষ্যতে আপনার জন্য দরজা খোলা রাখতে পারেন।
  • চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিন: চাকরির প্রস্তাব গ্রহণের আগে সেটি আপনার ক্যারিয়ার লক্ষ্য ও মূল্যবোধের সঙ্গে মানানসই কি না তা যাচাই করুন। ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নিলে ভবিষ্যতের অনুশোচনা এড়ানো যায়।

২। ‘ভুত চাকরি’ সম্পর্কে সচেতন থাকুন

চ্যালেঞ্জ: কিছু প্রতিষ্ঠান এমন চাকরির বিজ্ঞাপন দেয় যেগুলোতে তারা প্রকৃতপক্ষে নিয়োগ দিতে চায় না, ফলে প্রার্থীরা বিভ্রান্ত ও হতাশ হন।

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি:

  • প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজ নিন: আবেদন করার আগে প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করুন এবং অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে চাকরির পোস্টটি আছে কিনা তা যাচাই করুন।
  • নেটওয়ার্ক তৈরি করুন: পছন্দের পেশাগত ক্ষেত্রের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। এতে করে প্রকৃত ও বিশ্বাসযোগ্য চাকরির খোঁজ পাওয়া সহজ হয়।

৩। যোগাযোগে পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন

চ্যালেঞ্জ: আবেদন বা অনবোর্ডিং প্রক্রিয়ায় নিয়োগকর্তাকে “ঘোস্ট” করা (হঠাৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা) আপনার পেশাগত ইমেজকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি:

  • সময়মত উত্তর দিন: সম্ভাব্য নিয়োগকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করুন। যদি কোনো পরিবর্তন হয়, তা যত দ্রুত সম্ভব জানিয়ে দিন।
  • প্রশ্ন করুন: কোনো ভূমিকা বা কাজের প্রত্যাশা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা থাকলে খোলামেলা প্রশ্ন করুন। এতে আপনি বুঝতে পারবেন এটি আপনার জন্য উপযুক্ত কি না।

৪। চাকরি বাজারের হতাশা গঠনমূলকভাবে মোকাবিলা করুন

চ্যালেঞ্জ: বাংলাদেশে চাকরি পাওয়া অনেক সময় কঠিন ও প্রতিযোগিতামূলক হতে পারে, যা হতাশার জন্ম দিতে পারে।

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি:

  • নিরবিচারে শিখুন: নতুন স্কিল অর্জন করতে অনলাইন কোর্স, ট্রেনিং বা সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম গ্রহণ করুন, যা আপনাকে কর্মক্ষেত্রে আরও যোগ্য করে তুলবে।
  • মনোবল ধরে রাখুন: প্রত্যাখ্যান চাকরি খোঁজার একটি অংশ। প্রতিটি অভিজ্ঞতা থেকে শিখে ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন।

পেশাগত জীবনে সততা, স্পষ্টতা ও দৃঢ় মানসিকতা আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। স্মার্ট হোন, দায়িত্বশীল হোন।