Post navigation
যানজট,কোলাহল আর ধূলাবালির দায়মুক্ত এক টুকরো সবুজ ভূমি ঘিরেই আমাদের ক্যাম্পাস। যেখানে কথা বলে সবুজ! নিস্তদ্ধ রাতে ,বাতির সাথেও যার সৌন্দর্য্যের কমতি পড়ে না ! দিনের আলোতে, রাতের আঁধারে , কুয়াশার চাদরে, বৃষ্টির ফোঁটাতে নতুন করে সাজে নতুন রূপে। মফস্বল বা শহর যেখান থেকেই আসুন না কেনো একটু নজর কাড়বেই, কিছুক্ষণের জন্য হলেও চোখ জ্বলসাবে সবুজে। সকালে সূর্যের লাল আভায় একরকম রঙ ছড়ায় সবুজ, বিকেলে অন্য। রাতে সোডিয়ামের বাতিগুলো অন্ধকারে হারাতে দেয় না লাবণ্য। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত, হেমন্ত কিংবা বসন্তেও প্রকৃতি নিজের মত করে নতুন নতুন পসরা সাজিয়ে রাখে এখানে, চিরযৌবনা সবুজ ধরে রাখে। আমি তাহাকে চিরযৌবনা হতেই দেখেছি শুধু কখনো বিমর্ষ রূপে দেখেনি।
চলুন কিছুক্ষণের জন্য সেখান থেকে ঘুরে আসি চিত্রকথায়ঃ লেখাঃ সৌরভ আহমেদ, ছবিঃ নিলয় বিশ্বাস
ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার ব্যবহৃত প্রধান প্রবেশদ্বার দিয়ে ভিতরে পা রাখুন। দুপাশে এরকম আরো দুইটা প্রবেশদ্বার রয়েছে। হাতের ডানে কিংবা বামে তাকালেই দেখা যাবে বেশ কিছু ফুলগাছ তাকিয়ে আছে আপনার দিকে হয়ত মৃদ্যু বাতাসে মাথা নেড়ে স্বাগতম জানাচ্ছে। একটু সামনে হাতের বামপাশে পড়বে কাচেঘেরা অ্যাডমিশন অফিস। ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি এখানেই দেখা হয়। এছাড়াও কোনো বিষয়ে খরচ কেমন,ভর্তির জন্য কত খরচ, ওয়েবার কত পাবেন সব তথ্য মিলবে এখান থেকেই।
প্রধান ফটক থেকে সোজা সামনের দিকে গেলে প্রথমেই চোখে পড়বে বিশাল সবুজ মাঠ। মনে হবে সবুজের একটা রাজ্য বানিয়ে রাখা হয়েছে। চারপাশে চোখ বুলালেই মোটামুটি পুরো সবুজ ক্যাম্পাস চোখের সামনে ভেসে উঠবে। পরিচর্যা আর যত্নে সবুজ ঘাসগুলো যেনো প্রাণচঞ্চল হয়ে তাকিয়ে রয়েছে। খেলাধুলা ছাড়াও বিকেলে খোলা আকাশের নিচে মাঠের ঘাসে বসে আড্ডায় মত্ত থাকে শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টিতে কিংবা কুয়াশায় ভিজে ঘাসগুলো চিরযৌবনার বার্তা দেয়। নতুন আগুন্তকের মনে নাড়া দেওয়ার জন্য শুধু এই সবুজ মাঠেই যথেষ্ট।
মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে হাতের ডানদিকের রাস্তা ধরে এগুলেই দেখা মিলবে বাস্কেটবলের একটা ছোট্ট মাঠ। চারপাশে লোহার বেষ্টনীতে আটকানো ভিতরে রঙ করে দাগ দেওয়া সীমানা আঁকা। পাশেই মাথা উঁচু করে রয়েছে ‘গ্রীন গার্ডেন’রেস্টুরেন্ট। বিভিন্ন ধরণের দেশী বিদেশী খাবার আর আভিজাত্যের ছোঁয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে ক্যাম্পাসে। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশী অতিথিরা এখানেই তাদের ভোজন সম্পন্ন করে। তবে এটি ছাড়াও ক্যাম্পাসের ভিতরে ক্যান্টিনও রয়েছে ।
যেখানে ছিলেন সেখান থেকে সোজা আরেকটু সামনে বাড়লেই দেখতে পাবেন এবি-৩ ভবন। অনেক পুরনো এবং একটু ময়লাটে রঙের। ইচ্ছে হলে সামনের বসার সিঁড়িতে গাছের নিচে বসে একটু জিরিয়ে নিতে পারবেন খানিকক্ষণ। এবি-৩ ভবনের সামনের দিক দিয়ে চলে গেছে সাপের মত আঁকাবাঁকা নজরকাড়া রাস্তাটা। অনেকে পাইথন স্ট্রীটও বলে এর ঘটন দেখে। সিঁড়ির নিচে দুপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কতকগুলো রঙিন পাথর। ফুল-ফলের গাছগুলো সাজিয়ে রেখেছে প্রাঙ্গণ। ক্লাসের ফাঁকে কিংবা খেলা চলাকালে এখানে বসে সময় কাটায়,খেলা দেখে শিক্ষার্থীরা। বসার জন্য রয়েছে সিঁড়ি এবং তার নিচে আম,পেয়ারার গাছ। অনেকে সবুজ সেখানের সবুজ ঘাসের উপর বসে খেলা উপভোগ করে বা আড্ডা জমায়।
পাইথন ষ্ট্রীট বা আঁকাবাঁকা রাস্তাটি দিয়ে সামনে যেতে থাকলে দেখা মিলবে এবি-১ ভবনের। এখানেই বেশীরভাগ ক্লাস চলে। ক্লাসরুম ছাড়াও রয়েছে লাইব্রেরী, শিক্ষকদের জন্য কক্ষ, অ্যাকাউন্ট অফিস,ল্যাবসহ আরো অনেক কিছু। উপরের তলাগুলোতে সবসময় মৃদ্যু বাতাসের আনাগোনা থাকেই। ভবনে রয়েছে লিফটের ব্যবস্থা। যাওয়ার সময় রাস্তায় পড়বে কাঁঠালতলা এবং ভিন্ন ডিজাইনে বানানো মসজিদটি।
এবি-১ ভবন থেকে গেট দিয়ে বেরিয়ে সোজা সামনে উপরের দিকে ঢালু রাস্তা ধরে এগুলোই চলে যাবেন ‘বনোমায়া’য়! যাওয়ার সময় হাতের ডানে পড়বে নতুন বানানো ইনোভেশন ল্যাবের এবং বামে বিভিন্ন ফুল-ফলের ছোট্ট বাগান। ক্লাসের ফাঁকে আড্ডা, সময় কাটানো, প্রশান্তির ঢেঁকুর তোলার জন্য ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের অন্যতম প্রিয় স্থান। এখান থেকে প্রায়ই ভেসে আসে গীটারের টুংটাং শব্দ কিংবা খালি গলায় গান। কেউ কেউ পড়াশোনাতেও ব্যস্ত থাকে। অনেকে দুলনায় হেলান দিয়ে দুল খেতে খেতে হারিয়ে যেতে চায় নিজের থেকে। ছাতা টাইপের ছাদের নিচে বিভিন্ন সময় চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিংবা জন্মদিনের পার্টি ইত্যাদি ইত্যাদি। রাতের বনোমায়া অন্যরকম দৃশ্য তুলে ধরে। মৃদ্যু রঙিন আলো আর নিস্তবদ্ধতা মনকে বদলে দিবে পুরো।
বনোমায়া থেকে বের হয়ে ডানদিকে মাঠের পাশের রাস্তা ধরে এগুলোই দেখা মিলবে বিশাল বড় কাজ চলতে থাকা এবি-৪ভবনের। ভবনে না গিয়ে হাতের ডানের রাস্তা ধরে মোড় নিলেই দেখবেন বিশাল অডিটোরিয়াম। যেখানে বিভিন্ন সময় মঞ্চ মাতিয়েছেন দেশ বিদেশের নামীদামী শিল্পীরা এবং আগমন ঘটেছে দেশ বিদেশের অনেক গুণী,মানী মানুষের। এখানেই আয়োজন করা হয়েছে অনেক বড় বড় অনুষ্ঠানের।
অডিটোরিয়ামের সামনের ছোট মাঠের এক কোণায় লক্ষ্য করলে নজরে আসবে কৃত্রিমভাবে বানানো ঝর্ণা। পাহাড়ের সদৃশ বানানো ঝর্ণার গাঁ বেয়ে থেকে পানি পড়ছে নিচের দিকে। পানিতে জ্যান্ত সাদা-রঙ্গিন মাছ ছোটাছুটি করছে তা খালি চোখে স্পষ্ট দেখা যাবে। কিছুটা সময় জল আর মাছের খেলায় হারিয়ে যাবেন নিজ থেকে টেরও পাবেন না।
জল আর মাছের খেলা থেকে বের হয়ে এবি-৪ ভবনের দিকে চলে আসুন। নির্মাণাধীন রয়েছে ভবনটি পাশাপাশি ক্লাসও চলছে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আনাগোনা রয়েছে সেখানেও। শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছে দিবারাত্রি। নিচে একপাশে রয়েছে সুইমিংপুল। যার কাজ এখনো শেষ হয়নি।
হাতের বামে মাঠের পাশের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে থাকলে পাশে বসার জন্য বেশকিছু মাধ্যম পাবেন। সেগুলোতে সোজা হয়ে,হেলান শুয়ে যেমনে ইচ্ছে, কোনো গাছের নিচে ছায়ায় বসে আশপাশের মানুষের চলাফেরা কিংবা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন। তবে ভবনের সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেলে দৃশ্যটা একটু বদলে যাবে। দেখা মিলবে বড়সড় কিছু কাঁঠাল গাছের। সাথে আমসহ অন্যান্য ফলের গাছের উপস্থিতি রয়েছে সেখানে। বেশীরভাগ সময়েই শীতল বাতাসের প্রবাহ বজায় থাকে এখানে। জায়গাটা আগে কাঁঠালতলা নামে পরিচিত থাকলেও সম্প্রতি সিঁড়ির আধিক্যের কারণে সিঁড়ি চত্বরে রূপান্তরিত হয়ে গেছে। অধিকাংশ সময়েই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি থাকে এখানে। পড়া,ক্লাসের ফাঁকে ক্লান্তি কাটানোসহ আড্ডায় মুখরিত থাকে এখানটায়। বিশাল কাঁঠাল গাছ তার পাতার সবুজ ছাতা মেলে প্রশান্তি বিলাচ্ছে।
আমগাছের পাতার ফাঁক দিয়ে সোজা তাকালে ঘন সবুজ ঘাসের উপস্থিতি টের পাবেন ‘গলফ মাঠে’। মনে হবে ক্যাম্পাসের পুরো সবুজ এখানে একটু অল্প স্থানেই ঠাঁসা রয়েছে। ইচ্ছে করবে খালি পায়ে ঘাসের উপর কিছুক্ষণ হেঁটে বেড়াতে। ঘন সবুজে চোখ বুজে কিছুক্ষণ প্রকৃতি অনুভব করতে পারেন। চিরযৌবনা সবুজ ঘাস এখানে তার অস্তিত্ব পুরোপুরি ধরে রেখেছে।
তারপর আস্তে আস্তে সেখান থেকে সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসতে থাকলে চোখে পড়বে শহীদ মিনার। ভাষা শহীদদের শোক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেই সূচনালগ্ন থেকে। আশেপাশে রয়েছে বেশ কিছু ফুলের গাছ যেগুলো গহনার মতন সৌন্দর্য্য বর্ধনে অবদান রাখছে ক্যাম্পাসে।
এখান দিয়েই প্রস্থান হোক। নতুন আরেকটা দিনের অপেক্ষায়…
Post navigation
MOST COMMENTED
Bangladesh Football
Bodybuilding exercise techniques and guide lines
JMC DIU Career Related Show “Career Today” is @ RTV
Study Visit from CDC
DIU achieves World Quality Commitment (WQC) Award-2010
Tree Plantation Program at DIU Permanent Campus Plot, Ashulia
Most Spoken Languages In The World